অধ্যক্ষের বানী
বখতিয়ার খলজি ত্রয়োদশ শতকের গোড়ার দিকে লহনৌত্তিতে মাদ্রাসা স্হাপন করেছিলেন। ১৩৪২ খ্রিস্টাব্দে পুরো বঙ্গদেশ একই শাসনে এনেছিলেন সুলতান শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ। ১৩৩৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৫৭৬ খ্রিস্টব্দ পযর্ন্ত দুইশত বছরেরও অধিকাল বঙ্গদেশ স্বাধীন ছিল। এরই প্রেক্ষিতে এরুপ স্বাধীনতার বঙ্গদেশ আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে সারাবিশ্বে অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত হয়।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষ সাধনে গৌড়, পাণ্ডুয়া, তাণ্ডা, সোনারগা, আরাকান রাজসভায় বিশেষ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে বঙ্গদেশে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। ড. অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও ড. সুকুমার সেন পাঠান সুলতানী আমলকে (১৪৯৩-১৫৭৬ খ্রি.) বাংলা ভাষা সাহিত্য-সংস্কৃতির স্বর্ণযুগ বলে অভিহিত করেন। সোনারগায়ের কুটির শিল্প ও বিশ্ববিখ্যাত মসলিন বিশ্ব-বেনিয়াদের তাগ লাগিয়ে দিয়েছিলো। ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দের দিকে নব উদ্যমে কলিকাতা আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাধারার শাসক ইংরেজদের উদ্যোগে তাদের প্রবর্তিত ইংরেজি শিক্ষাকেও চ্যালেঞ্জ করে একটি শক্তভিত্তি স্হাপন করেছিলো।
তাই ড. কুদরত-ই-খোদা-খোদা থেকে অধ্যাপক আবুল ফজল পযর্ন্ত অসংখ্য জ্ঞানী, গুণী-বিজ্ঞানী মাদ্রাসা শিক্ষার মাধ্যমে গৌড়বান্বিত হয়েছিলেন। ১৯৪৭ এর দেশ ভাগের সময় বঙ্গদেশ পূর্ব ও পশ্চিমে বিভক্ত হলে কলিকাতা আলিয়া মাদ্রাসার অর্ধেক উপাদান নিয়ে ক্রমে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা এবং তৎপরে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
এইভাবে বৃটিশ ভারত থেকে শুরু করে পাকিস্তান এবং তৎপরে বাংলাদেশেও মাদ্রাসা শিক্ষা আমাদের অধিকার আদায় ও ভাষা আন্দোলনেও অধীকার আন্দোলনের ভিত্তিমূলে সঞ্জিবনী সুধা হিসেবে কাজ করেছিলো।
এইজন্য পূর্ব-বাংলার স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাদ্রাসা শিক্ষাকে আমাদের ঐতিহ্যের, আমাদের স্মারক হিসেবে এর উৎকর্ষ সাধনের ঘোষণা দেন। তিনি মাদ্রাসা আধুনিকায়নের নিদর্শনা প্রদান করেন এবং প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে ঢাকার ইসলামিক ফাউন্ডেশন গঠন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় স্বাধীন বাংলাদেশে বিএওএম এর মানে মাদ্রাসার কামিল ফাজিল এর মান উন্নত করা হয়। এরই প্রেক্ষাপটে বতর্মান সরকার দেশের বড়বড় মাদ্রাসায় ফাজিল পর্যায়ে অনার্স কোর্স কোনো চালু করেন। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা মানের সমপর্যায়ে উন্নীত করেন।
বতর্মান সরকার আরো একধাপ সংস্কারের মাধ্যমে আধুনিক স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সিলেবাসের সমন্বয় করে বতর্মান মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে অধিক গুরুত্ব প্রদান করতে মহিলা মাদ্রাসার উন্নয়নেও বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। মানিকদি আল ইসলাহ মহিলা আলিম মাদ্রাসার বিজ্ঞান শাখা খোলা হয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তিকে মাদ্রাসা ছাত্রীদের হাতের কাছে পৌছে দিতে সর্বাগ্রে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করে আমাদের মাদ্রাসা ২১টি অত্যাধুনিক কম্পিউটার সংযোজন করে উন্নত শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করে আমাদের ধন্য করেছেন।
আমরা এরই ধারাবাহিকতায় মাদ্রাসায় নতুন ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। এইসব প্রাপ্তি ও অর্জনের জন্য আমরা সবাই মহান আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় করছি। আমিন।।